🧾 ভ্যাট রিভেট (VAT Rebate) সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ভ্যাট রিভেট হলো একটি কর রিফান্ডের ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে নিবন্ধিত ব্যবসায়ীরা তাদের অতিরিক্ত পরিশোধিত ইনপুট ভ্যাট ফেরত পেতে পারেন বা পরবর্তী ভ্যাট পরিশোধে সমন্বয় করতে পারেন।
🧩 ভ্যাট রিভেট কী?
যখন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কাঁচামাল বা সেবা কিনে, তখন সে ইনপুট ভ্যাট প্রদান করে। আবার সেই পণ্য বা সেবা বিক্রি করলে গ্রাহকের কাছ থেকে আউটপুট ভ্যাট গ্রহণ করে। যদি ইনপুট ভ্যাটের পরিমাণ আউটপুট ভ্যাটের চেয়ে বেশি হয়, তখন অতিরিক্ত ভ্যাট রিভেট (rebate) হিসাবে দাবি করা যায়।
✅ রিভেট পাওয়ার শর্তসমূহ
-
ব্যবসার বৈধ ভ্যাট নিবন্ধন (BIN) থাকতে হবে
-
বৈধ চালানপত্র (মূসক ৬.৩) থাকতে হবে
-
নিয়মিত মাসিক ভ্যাট রিটার্ন (মূসক-৯.১) দাখিল করতে হবে
-
রিভেটযোগ্য খাতে ইনপুট ব্যয় হতে হবে (যেমন: উৎপাদন, রপ্তানি ইত্যাদি)
📊 উদাহরণ দিয়ে বুঝুন
আপনি কাঁচামাল কিনলেন ১০,০০০ টাকায়, যেখানে ভ্যাট দিয়েছেন ১,৫০০ টাকা (ইনপুট ভ্যাট)।
পরে আপনি সেই পণ্য বিক্রি করলেন ৮,০০০ টাকায় এবং ভ্যাট আদায় করলেন ১,২০০ টাকা (আউটপুট ভ্যাট)।
এক্ষেত্রে:
ইনপুট ভ্যাট > আউটপুট ভ্যাট
১,৫০০ > ১,২০০
⇒ অতিরিক্ত ৩০০ টাকা আপনি রিভেট হিসেবে পরবর্তী মাসে সমন্বয় করতে পারবেন।
❌ যেসব ক্ষেত্রে রিভেট প্রযোজ্য নয়
-
অ-নিবন্ধিত উৎস থেকে পণ্য ক্রয়
-
ভ্যাট চালান না থাকলে
-
ব্যক্তিগত বা নিষিদ্ধ খাতে ব্যয়
-
সরকার কর্তৃক ঘোষিত রিভেট অযোগ্য খাত
📋 কীভাবে আবেদন করবেন?
-
প্রতি মাসে মূসক-৯.১ ফর্মে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করুন
-
রিটার্নে ইনপুট ও আউটপুট ভ্যাটের হিসাব দিন
-
অতিরিক্ত ইনপুট ভ্যাট থাকলে, রিভেট হিসেবে দেখান
-
চাইলে রিফান্ড আবেদন করেও টাকা ফেরত নিতে পারেন (বিশেষত রপ্তানিকারকদের ক্ষেত্রে)
📘 প্রাসঙ্গিক আইন ও বিধান
-
মূল্য সংযোজন কর আইন, ২০১২
-
মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা, ২০১৬
🏁 উপসংহার
ভ্যাট রিভেট ব্যবসার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা। এর মাধ্যমে একটি ব্যবসা অতিরিক্ত ভ্যাট খরচ থেকে মুক্ত থাকতে পারে এবং নগদ প্রবাহে স্বস্তি পায়। সঠিক রিটার্ন দাখিল এবং উপযুক্ত কাগজপত্র সংরক্ষণের মাধ্যমে আপনি এই সুযোগটি সহজেই কাজে লাগাতে পারেন।
Post a Comment
0Comments