সম্পূর্ণ গাইড – কোম্পানির আয়কর কীভাবে নির্ধারিত হয় (Bangladesh) ২০২৫
Corporate Tax: কোম্পানির আয়কর কীভাবে নির্ধারিত হয় – Corporate Tax Rules BD
১) কোম্পানির আয়কর কেন গুরুত্বপূর্ণ?
কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যদি আয় করে (লাভ করে) তাহলে তার উপর আয়কর ধার্য হয়। National Board of Revenue (NBR)-র নিয়ম অনুযায়ী কোম্পানিগুলোকে নির্ধারিত রেট অনুসারে কর পরিশোধ করতে হয়। কোম্পানির কর ঠিকভাবে দেওয়া না হলে দণ্ড, জরিমানা বা আইনগত ব্যবস্থা হতে পারে।
২) করযোগ্য আয় (Taxable Income) কীভাবে নির্ধারিত হয়?
কোম্পানির করযোগ্য আয় সাধারণত নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে নির্ধারিত হয়:
- মোট আয় (Revenue) – সমস্ত উৎস থেকে আয়।
- ব্যয় (Expenses) – আইন অনুসারে অনুমোদিত ব্যয়, যা আয় থেকে বাদ দেওয়া যায়।
- ছাড় (Allowances) – নির্ধারিত ক্ষেত্রে যেমন বিনিয়োগ ছাড় বা কর-ছাড়।
- সংশোধিত আয় = মোট আয় − অনুমোদিত ব্যয় − ছাড়।
- কোম্পানির এই সংশোধিত আয়েই কর ধার্য হয়।
কর্তৃপক্ষ ব্যয় হিসেবে নিয়েছে নির্দিষ্ট বিষয় যেমন – ব্যাংক ট্রান্সফার, বিনিয়োগ, মেশিন আমদানি ইত্যাদি। ব্যয় ঠিকভাবে প্রমাণ করতে না পারলে হয়তো করদাতা ব্যয় গুণে বাদ দিতে পারবেন না।
৩) রেট-ব্যবস্থা (Corporate Tax Rates) ২০২৫
বাংলাদেশে কোম্পানিগুলোর জন্য সাধারণ করহার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্ধারিত আছে:
| কোম্পানির ধরন | কর হার |
|---|---|
| তালিকাভুক্ত কোম্পানি (Publicly traded) – শেয়ার বাজারে কমপক্ষে ১০% প্রাথমিক প্রকাশ (IPO) করেছে | প্রায় ২০% (শর্ত মেনে) |
| তালিকাভুক্ত কোম্পানি – ১০% বা তার কম IPO করেছে | ≈ 22.5% |
| তালিকায় নেই (Non-listed companies) | ≈ 27.5% |
| ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান (Listed/Unlisted) ও মোবাইল অপারেটর | উচ্চ রেট (প্রায় 37.5%–45%) |
নোটঃ রেট সময়-সময়ে বাজেট বা আইন পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে — সর্বশেষ পরিবর্তন জন্য NBR ও কর আইন দেখুন।
৪) মিনিমাম ট্যাক্স ও বিকল্প করব্যবস্থা
যদি কোনো কোম্পানির লাভ খুব কম হয় বা লস হয়, তবুও “মিনিমাম কর” হিসাবে নির্ধারিত একটি নির্দিষ্ট হার বা করদানের পদ্ধতি রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, উৎপাদনকারী কোম্পানির প্রথম তিন বছরের জন্য ০.১০% গ্রস রসিদের উপর কর ধার্য হতে পারে।
৫) কর-রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা ও পদ্ধতি
কোম্পানিগুলোকে নিয়মিত কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়, সাধারণভাবে আয়বছর শেষের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।
অনলাইন বা অফলাইন মাধ্যম থেকে ফরম পূরণ, আর্থিক প্রতিবেদন সংযুক্ত, ব্যাংক ট্রান্সফার প্রমাণ রাখতে হয়।
৬) কর বাদযোগ্য বিষয় ও বিনিয়োগ ছাড়
বিনিয়োগে প্রাপ্ত কর ছাড় যেমন—অনুমোদিত ডিবেঞ্চার, সঞ্চয়পত্র, পরিবেশ-সচেতন নির্মাণ প্রকল্প ইত্যাদি। কোম্পানিদের উদ্দেশ্য হলো করযোগ্য আয় কমিয়ে করের বোঝা হালকা করা।
৭) কর ফাঁকি ও দণ্ডবিধি
কানুন মতে কর ফাঁকি, আয় গোপন বা ব্যাংকিং চ্যানেল না ব্যবহার করলে অতিরিক্ত কর, জরিমানা ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কোম্পানির বাজেট বা আইন-প্রণয়ন পরিবর্তনের কারণে শর্ত আরও কঠোর হয়েছে।
৮) সহজ উদাহরণসহ হিসাব
ধরা যাক একটি কোম্পানি ২০২৫ সালের আয়বছরে আয় করেছে ৳ ২০ কোটি। ব্যয় ও ছাড়ের পর করযোগ্য আয় হয়েছে ৳ ১৫ কোটি। যদি এই কোম্পানি তালিকাভুক্ত না হয়, তাহলে কর হার 27.5% ধরা যাক:
কর = ৳ ১৫ কোটি × 27.5% = ৳ ৪ কোটি ১২.৫ লক্ষ
যদি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয় এবং শর্ত পূরণ করে 20% রেটে কর হয়, তাহলে কর হবে ≈ ৳ ৩ কোটি
Post a Comment
0Comments