Customs Act 2023 কার্যকর: পণ্য ঘোষণা, সময়সীমা ও আমদানিকারকের দায়বদ্ধতা [HS Code]

Government Learning
By -
0
Customs Act 2023 কার্যকর: পণ্য ঘোষণা দাখিল, প্রক্রিয়া, সময়সীমা ও আমদানিকারকের দায়বদ্ধতা

🚢 কাস্টমস আইন ২০২৩ কার্যকর: পণ্য ঘোষণা দাখিলের প্রক্রিয়া, সময়সীমা ও আমদানিকারকের দায়বদ্ধতা

কাস্টমস আইন ২০২৩ কার্যকর হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। এই আইনটি পুরনো কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯-এর স্থলাভিষিক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও ডিজিটাল পরিপালনের উপর জোর দিয়েছে। আমদানিকারকদের জন্য পণ্য ঘোষণা (Goods Declaration)** দাখিলের প্রক্রিয়া, কঠোর সময়সীমা এবং এর সঙ্গে জড়িত আমদানিকারকের দায়িত্ব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি।


১. 📄 পণ্য ঘোষণা দাখিলের প্রক্রিয়া ও এইচএস কোড-এর গুরুত্ব

নতুন আইনে, পণ্য ঘোষণা দাখিলের পদ্ধতি আরও সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। আমদানিকারক বা তার মনোনীত প্রতিনিধিকে নিম্নোক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়:

  • দাখিলপত্র: আমদানির ক্ষেত্রে, পণ্যের বিবরণ সম্বলিত প্রধান নথিটি হলো বিল অফ এন্ট্রি (Bill of Entry)। রপ্তানির ক্ষেত্রে, এটি হলো বিল অফ এক্সপোর্ট। এই দাখিলপত্রটিই আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্য ঘোষণা হিসেবে গণ্য।
  • ডিজিটাল মাধ্যম:বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ঘোষণা জাতীয় একক জানালা (National Single Window) বা ASYCUDA World সিস্টেমের মাধ্যমে **অনলাইন বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে দাখিল করতে হয়।
  • এইচএস কোড (HS Code): ঘোষণাপত্রে পণ্যের সঠিক শ্রেণিবিন্যাস (Classification) এর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এইচএস কোড ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। এইচএস কোড ভুল হলে শুল্ক ফাঁকি এবং মিথ্যা ঘোষণার অভিযোগ আসতে পারে।
  • মূল্য ঘোষণা: পণ্যের সঠিক শুল্কায়ন মূল্য (Assessable Value) ঘোষণা করতে হবে। মূল্যে কোনো গরমিল থাকলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তা যাচাই করে।

২. ⏱️ ঘোষণা দাখিলের কঠোর সময়সীমা (Timeline)

কাস্টমস আইন ২০২৩ অনুযায়ী, পণ্য খালাস প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে ঘোষণা দাখিলের সময়সীমা কঠোরভাবে নির্ধারিত হয়েছে:

  • জলপথে আমদানি: জাহাজ বন্দরে পৌঁছানোর পর ৭ কার্যদিবসের মধ্যে বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করতে হবে।
  • স্থল ও বিমানপথে আমদানি: পণ্য প্রবেশের পর ৩ কার্যদিবসের মধ্যে বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করতে হবে।
  • ব্যর্থতার শাস্তি: নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ঘোষণা দাখিল করতে ব্যর্থ হলে আমদানিকারকের উপর জরিমানা আরোপ করা হতে পারে এবং সংশ্লিষ্ট পণ্য নিলাম বা বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়ায় চলে যেতে পারে।

৩. ⚖️ আমদানিকারকের দায়িত্ব, মিথ্যা ঘোষণা ও জরিমানা

নতুন আইনে আমদানিকারকের দায়িত্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘোষণা দাখিলের পর সেই তথ্যের সত্যতা নিয়ে আমদানিকারক সম্পূর্ণভাবে দায়বদ্ধ থাকেন।

🔴 মিথ্যা ঘোষণার শাস্তি:

মিথ্যা ঘোষণা: পণ্য ঘোষণা-এ যদি এইচএস কোড, পরিমাণ বা মূল্য ভুল দেওয়া হয় (যা শুল্ক ফাঁকির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়), তবে তা মিথ্যা ঘোষণা হিসেবে গণ্য হয়। এই অপরাধে পণ্যের শুল্কায়ন মূল্যের উপর ভিত্তি করে অর্থদণ্ড (জরিমানা) আরোপ এবং ক্ষেত্রবিশেষে পণ্য বাজেয়াপ্ত হতে পারে (আইনের ধারা ৮২, ৮৫ এবং অন্যান্য)।

দ্রষ্টব্য: ভুল সংশোধনের সুযোগ থাকলেও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরীক্ষণ (Examination) শুরু হয়ে গেলে বা ভুল ধরা পড়লে তা সহজে পরিবর্তন করা যায় না।

অন্যান্য আমদানি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত দায়িত্ব:

  • পণ্য খালাস না হওয়া পর্যন্ত পণ্যের নিরাপত্তার জন্য আমদানিকারক দায়বদ্ধ।
  • শুল্ক ও কর পরিশোধের ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
  • সরকার নির্ধারিত মানদণ্ড ও বিধিমালা (যেমন BSTI, BTRC-এর ছাড়পত্র) অনুসরণ করা।

কাস্টমস আইন ২০২৩-এর যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমদানি প্রক্রিয়া দ্রুত ও স্বচ্ছ করা সম্ভব।

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)