Property Tax কী? বাংলাদেশে সম্পত্তি করের হার, হিসাব পদ্ধতি ও পরিশোধের নিয়মাবলী

Government Learning
By -
0
Property Tax কী? বাংলাদেশে সম্পত্তি করের হার, হিসাব পদ্ধতি ও পরিশোধের নিয়মাবলী

🏘️ Property Tax কী? বাংলাদেশে সম্পত্তি করের হার, হিসাব পদ্ধতি ও পরিশোধের নিয়মাবলী

স্থাবর সম্পত্তি বা রিয়েল এস্টেটের মালিক হিসেবে আপনার অন্যতম প্রধান আর্থিক দায়িত্ব হলো সম্পত্তি কর (Property Tax) পরিশোধ করা। বাংলাদেশে এই করটি সাধারণত হোল্ডিং ট্যাক্স নামে পরিচিত এবং এটি স্থানীয় সরকার বা পৌরসভা কর্তৃক আরোপিত হয়। এই করের টাকাই স্থানীয় অঞ্চলের উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা প্রদানে ব্যবহৃত হয়।


১. 📜 Property Tax কাকে বলে?

Property Tax হলো স্থানীয় সরকার (যেমন সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ) কর্তৃক কোনো ব্যক্তির মালিকানাধীন জমি, আবাসিক ভবন, বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট বা অন্যান্য স্থাবর সম্পত্তির উপর ধার্য করা বাৎসরিক কর। এই কর আদায়ের মূল ভিত্তি হলো সম্পত্তির বার্ষিক মূল্যায়নযোগ্য ভাড়া মূল্য (Annual Rateable Value)।

বাংলাদেশে এই করটি মূলত দুই ধরনের হয়:

  • হোল্ডিং ট্যাক্স (Holding Tax): এটি ভবনের উপর আরোপিত প্রধান কর।
  • ভূমি উন্নয়ন কর (Land Development Tax): এটি জমির উপর আরোপিত কর, যা ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত হয়।

২. 🧮 সম্পত্তি করের হিসাব পদ্ধতি (বার্ষিক মূল্যায়ন)

সম্পত্তি করের পরিমাণ নির্ধারণের জন্য সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করে।

  1. বার্ষিক ভাড়া মূল্য নির্ধারণ: প্রথমে সম্পত্তির সম্ভাব্য মাসিক বাৎসরিক ভাড়া মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
  2. ভাড়া মূল্য থেকে ছাড়: এই বার্ষিক ভাড়া মূল্য থেকে কিছু ছাড় দেওয়া হয়, যেমন রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় (Maintenance Cost) বাবদ কিছু শতাংশ (সাধারণত ২৫-৩০%) বাদ দেওয়া হয়।
  3. বার্ষিক মূল্যায়নযোগ্য মূল্য (ARV): রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বাদ দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে, সেটাই হলো সম্পত্তির বার্ষিক মূল্যায়নযোগ্য মূল্য (Annual Rateable Value - ARV)।
  4. কর হার প্রয়োগ: এই ARV-এর উপর স্থানীয় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর হার (Tax Rate) প্রয়োগ করে সম্পত্তি করের পরিমাণ নির্ণয় করা হয়।

কর হার (Tax Rate)

কর হার স্থানভেদে ভিন্ন হয়। সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার বোর্ড সভার মাধ্যমে এটি নির্ধারিত হয়। সাধারণত, এই হার ARV-এর ১২% থেকে ২৮% পর্যন্ত হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • সাধারণ কর (General Rate)
  • আলোকর (Lighting Rate)
  • পরিচ্ছন্নতা কর (Conservancy Rate)
  • স্বাস্থ্য কর (Health Rate)

৩. 📅 পরিশোধের সময়সীমা ও কর ফাঁকির শাস্তি

নাগরিক সেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করা আবশ্যক।

পরিশোধের নিয়মাবলী:

  • সাধারণত ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এই কর পরিশোধ করতে হয়।
  • অধিকাংশ সিটি কর্পোরেশন বর্তমানে অনলাইন বা নির্দিষ্ট ব্যাংক বুথের মাধ্যমে কর পরিশোধের সুবিধা চালু করেছে।
  • সময়মতো কর পরিশোধ করলে কোনো জরিমানা দিতে হয় না।

কর ফাঁকির শাস্তি:

সম্পত্তি কর ফাঁকি দিলে বা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ না করলে কঠোর শাস্তি বা অতিরিক্ত চার্জ আরোপ করা হয়:

  • অতিরিক্ত চার্জ (Surcharge): বকেয়া করের উপর প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট হারে (যেমন ১% বা ২%) সারচার্জ বা বিলম্ব জরিমানা যোগ হতে থাকে।
  • আইনি নোটিশ: কর্তৃপক্ষ বকেয়া কর আদায়ের জন্য সম্পত্তির মালিকের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ জারি করতে পারে।
  • সেবা বন্ধ: কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার নাগরিক সুবিধা (যেমন পানি সরবরাহ) সাময়িকভাবে বন্ধ করতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: সম্পত্তি কর পরিশোধের প্রমাণপত্র (ট্যাক্স রসিদ) ভবিষ্যতে সম্পত্তি কেনা-বেচা, নামজারি এবং ব্যাংক ঋণ গ্রহণের জন্য একটি বাধ্যতামূলক দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়।

আরও পড়ুন: আপনার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু গাইড

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)