ট্যাক্স রিটার্ন কিভাবে জমা দিবেন? NBR e-Return: অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সহজ নিয়ম

Government Learning
By -
0

ট্যাক্স রিটার্ন কিভাবে জমা দিবেন? NBR e-Return: অনলাইন রিটার্ন ফাইলিং গাইড ও সহজ পদ্ধতি

বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (NBR) e-Return পোর্টাল (etaxnbr.gov.bd) ব্যবহার করে **অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা অত্যন্ত সহজ ও সময়সাপেক্ষ। এই গাইডলাইনে আমরা অনলাইন ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল** করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে আলোচনা করব। আপনার সমস্ত আয়কর সংক্রান্ত কাজ এখন ঘরে বসেই সম্পন্ন করুন!


📝১. NBR e-Return সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া

ই-রিটার্ন জমা দেওয়ার নিয়ম শুরু করার আগে আপনাকে NBR পোর্টালে একবার রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

  1. ওয়েবসাইটে প্রবেশ: etaxnbr.gov.bd-এ গিয়ে "eReturn" অপশনে ক্লিক করুন।
  2. "Registration" বাটনে ক্লিক করুন।
  3. আপনার ১২ ডিজিটের টিআইএন (TIN) নম্বর এবং বায়োমেট্রিক যাচাইকৃত মোবাইল নম্বর প্রদান করুন।
  4. মোবাইলে আসা ৬ ডিজিটের OTP কোডটি সঠিকভাবে দিয়ে যাচাই (Verify) করুন।
  5. কমপক্ষে ৮ অক্ষরের একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সেট করুন (যা ভবিষ্যতে লগইন করতে কাজে লাগবে)।

📋২. রিটার্ন পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় চেকলিস্ট (কাগজপত্র)

রিটার্ন দাখিল শুরু করার আগে নিম্নলিখিত ডকুমেন্টগুলো প্রস্তুত রাখুন:

বিভাগ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
আয় সংক্রান্ত বেতন স্লিপ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ভাড়ার চুক্তিপত্র (যদি থাকে)।
সম্পদ ও দায় জমির দলিল/ফ্ল্যাটের মূল্য, ব্যাংক ব্যালেন্সের প্রমাণ, লোনের বিবরণ।
বিনিয়োগ/ছাড় সঞ্চয়পত্রের কপি, লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়াম পরিশোধের রসিদ, শেয়ার/মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগের প্রমাণ।
পরিশোধিত কর বেতন থেকে উৎসে কর কর্তনের প্রমাণপত্র, ব্যাংক বা অন্যান্য উৎস থেকে উৎসে করের প্রত্যয়নপত্র।

💻৩. রিটার্ন দাখিল করার ধাপসমূহ (e-Return Filing)

টিআইএন এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগইন করার পর নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

  • রিটার্ন ফরম নির্বাচন: আপনার কর বছরের (Assessment Year) জন্য প্রযোজ্য রিটার্ন ফরম নির্বাচন করুন।
  • ধাপে ধাপে তথ্য এন্ট্রি:
    • প্রথমে ব্যক্তিগত তথ্য (নাম, ঠিকানা, ইত্যাদি) যাচাই করুন।
    • আপনার আয়ের উৎসগুলো (বেতন, ব্যবসা, বাড়ি ভাড়া, ব্যাংক সুদ ইত্যাদি) উল্লেখ করুন।
    • নির্দিষ্ট সেকশনে আপনার সম্পদ (Assets) ও দায় (Liabilities) (ব্যাংক লোন, ইত্যাদি) এর তথ্য দিন।
    • আপনার বিনিয়োগ ও কর রেয়াত সংক্রান্ত তথ্য যুক্ত করুন।
  • স্বয়ংক্রিয় কর হিসাব: সিস্টেম আপনার এন্ট্রি করা তথ্য থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করের পরিমাণ (Tax Liability) হিসাব করবে।
  • কর পরিশোধ (যদি প্রযোজ্য হয়): যদি কোনো কর বাকি থাকে, তবে "Pay Now" বাটন ব্যবহার করে অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে (বিকাশ, নগদ, কার্ড) পরিশোধ করুন।
  • চূড়ান্ত সাবমিট: সমস্ত তথ্য সঠিক থাকলে "Submit" বাটনে ক্লিক করে রিটার্ন জমা দিন।

⚠️৪. সময়সীমা ও যাদের জন্য রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক

রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা

সাধারণত প্রতি বছর ৩০ নভেম্বর হলো আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন। এই দিনটি ট্যাক্স ডে নামে পরিচিত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা না দিলে আপনি জরিমানা বা শাস্তির সম্মুখীন হতে পারেন।

কার জন্য রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক?

নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে টিআইএন থাকা সাপেক্ষে রিটার্ন দাখিল করা আবশ্যক:

  • যদি আপনার বার্ষিক আয় করমুক্ত আয়ের সীমা (সাধারণত ৩,৫০,০০০ টাকা) অতিক্রম করে।
  • যদি আপনি কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার, পরিচালক বা অংশীদার হন।
  • যদি আপনি মোটরগাড়ির (কার/জিপ) মালিক হন।
  • যদি আপনি সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বাড়ি-সম্পত্তির মালিক হন।

৫. সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)

Q. ই-রিটার্ন সাবমিট করার পর কি কোনো হার্ড কপি জমা দিতে হয়?

A. না, ই-রিটার্ন প্রক্রিয়ায় কোনো সাপোর্টিং ডকুমেন্ট বা হার্ড কপি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে সব কাগজপত্র নিজের কাছে কমপক্ষে ৬ বছর সংরক্ষণ করতে হবে।

Q. অনলাইন ট্যাক্স পরিশোধের পর প্রমাণপত্র কি সাথে সাথে পাওয়া যায়?

A. হ্যাঁ, সফলভাবে ট্যাক্স পরিশোধ করার পর আপনি চালান কপি/e-Payment রসিদ এবং রিটার্ন দাখিলের Acknowledgement Slip সাথে সাথেই ডাউনলোড করতে পারবেন।


আপনার আয়কর রিটার্ন জমা সম্পন্ন!

সঠিকভাবে এবং সময়মতো রিটার্ন দাখিল করা একজন দায়িত্বশীল নাগরিকের কর্তব্য। যদি কোনো ধাপে সমস্যা হয়, তবে NBR এর হেল্পলাইনে যোগাযোগ করুন।

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)